চাঁদে ‘বাড়ি’ বানানোর কাজ কতদূর?
মানুষের মুখে প্রায়ই শোনা যায়, চাঁদ নিয়ে নানা কথা। সত্যিই, ঢাকায় রাস্তায় বসে চাঁদের চিন্তা...
প্রকাশিত: ৩:৩৮ পূর্বাহ্ণ, ১১ এপ্রিল, ২০২০
ছবি: আলোকিত সংবাদ
মোঃ সুজন বেপারী – মীরকাদিম ডেস্ক – নোভেল করোনা ভাইরাস আতঙ্কের মধ্য দিয়ে নানাবিধ দু:চিন্তা আর হতাশায় দিন কাটাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। মুন্সীগঞ্জে ছোট খাটো চায়ের দোকানি, দিন মজুর, শ্রমিক , জেলে, কৃষিকাজে নিয়োজি শ্রমিক, হকার, সর্বাপরি দিন এনে দিন খাওয়া পরিবার, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টী বেধে সম্প্রদায়, হিজড়া, দু:স্থ, অসহায়, ভ্থমিহীনসহ বহু জনগোষ্টির বসবাস মুন্সীগঞ্জ জেলায়। মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার ইছামতি নদীর তীরে ১৩০টি বেধে সম্প্রদায়ের বসবাস। বহু বছর ধরে তারা এখানে বসবাস করে নদীতে মাছ ধরা, নারীরা সাপ খেলা, সিরামিক, থালাবাসন বিক্রিসহ বিভিন্ন পেশায় কাজ করে জীবন জীবিকা চালাতো। করোনা প্রাদূভাবের ফলে বন্ধ হয়ে যায় তাদের রুজি রোজগার। জেলা প্রশাসক এবং বাংলাদেশ পুলিশের দেয়া খাদ্য সহায়তায় তারা ১৫দিন চলে ভালোই। আগামী দিনগুলোতে তারা কিভাবে চলবে তাদের চোখে মুছে দু:চিন্তার ছাপ। প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির নানা অভিযোগ তাদের। পাশাপাশি ধনী বা পয়সাওয়ালা লোকগুলোর বাজার করার হিড়িক পড়ে শহর এবং গ্রামাঞ্চলের বাজারগুলোতে। প্রতিদিনই তারা বাজারগুরোতে হুমড়ি খেয়ে পরছে তারা। ২/৩ মাসের বাজার কিনে দেশে কৃতিম খাদ্য সংকট করেই চলছে। দেশে প্রচুর খাদ্য মজুদ থাকা স্বত্বেও বেপরোয়া মানুষগুলো প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এভাবেই তারা পন্য নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য কিনে মজুদ করেই চলছে।
অন্যদিকে জেলা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে ত্রান সহায়তা দেয়া হচ্ছে সেগুলো সুষ্ঠ বন্টন হলেও বিভিন্ন ব্যক্তি, সংস্থা এবং রাজনৈতিক নেতাদের দেয়া ত্রান সহায়তা প্রদান নিয়ে মানুষের ব্যাপক অভিযোগ। নিম্ন আয়ের মানুষের অভিযোগ হলো শহর, গ্রাম এবং পাড়া মহল্লায় যেভাবে ত্রান বিতরন হচ্ছে সেটা হলো অনেকটা লোক দেখানো। স্বজন প্রীতি আর মুখ চিনে দেয়া হচ্ছে ত্রান সহায়তা। যাদের ত্রান সহায়তা পাওয়া জরুরি তারা পাচ্ছেনা একবারও । অথচ যাদের পাওয়ার কথা না তারা ২/৩ বার পেয়েছে খাদ্য সহায়তা। তাছাড়া করোনার কারনে কর্মহীন মধ্য বিত্ত ও নিম্ন বিত্ত পরিবারের রেঅকগুলো অর্থের পড়েছে কাজে না যেতে পেরে। অর্থেল অভাবে নানাবিধ সংকটে পড়ছে তারা। সমাজের মধ্য বিত্ত পরিবারগুলো লোক লজ্জার ভয়ে কারো কাছে বলতে পারছেনা তাদের অভাব অনটনের কথা। তারা বলছে যারা কষ্টে আছে , যাদের দেয়া একান্ত প্রয়োজন তাদের মাঝে সরকারী / বেসরকারী খাদ্য সহায়তা সুষ্ঠভাবে বন্টন করা হউক। তারা আরো বলেছেন ত্রান বিতরনের তালিকা তৈরীতে গলদ আছে। ১০ টা কেজী দরে চাল বিক্রিতেও অনিয়ম আছে। লাইনে দাঁড়িয়ে বিক্রির চেয়ে ব্লাকে বিক্রির অভিযোগও করেছে অনেকে। ১০ টাকা কেজির চাল সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে বিক্রি করলে নিম্ন বিত্ত বা মধ্য বিত্তবানরা আয়ের লোকজন অনেকটা উপকৃত হবে বলে দাবি সাধারন মানুষের।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে জানাগেছে, সরকারী /বেসরকারী খাদ্য সহায়তার মধ্যে চাল, ডাল , তেল, লবন, আলু, পেঁয়াজ, চিনি , সাবান ও আটা। কোথাও কোথাও নিম্ন বিত্তরা পেয়েছে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবানুনাশক কীটনাশক। যে সব এলাকায় এখনও প্রকৃত দিন মজুর এবং স্বল্প আয়ের মানুষগুলো সরকারী/ বেসরকারী ত্রান সহায়তা পায়নি সেই সব এলাকার নামগুলো কিছু অংশ দেয়া হলো। শহরের উত্তর ইসলাম পুর, দক্ষিন ইসলামপুর, খালইষ্ট, গোয়ালপাড়া, মাঠপাড়া, রমজানবেগ, পূর্ব মীলমন্দি, মানিকপুরসহ বিভিন্ন এলাকা। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামগুলোতেও নিম্ন আয়ের মানুষ আজও পায়নি খাদ্য সহায়তা। ব্যক্তি, সংস্থা এবং রাজনৈতিক নেতাদের দেয়া ত্রান সহায়তা জোটেনি অনেকের ভাগ্যে। কেউ বা পেয়েছে ২/৩ বার । আবার কারও জোটেনি একবারও। শুধু তাই নয় এই ত্রান সহায়তার নামেও চলছে সেলফি। ফটোসেনশ, রাতের আঁধারে ঘরে ঘরে পৌছানোর প্রতিশ্রুতি। দরজা খুলেই খাবারের প্যাকেট পাবে, অনেকে সংবাদ সম্নলন করেও ত্রান দিয়েছে। পাশাপাশি ত্রান বিতরনের নামে লোকসমাগমও কম করেনি অনেকেই।
মিরকাদিমের একাধিক বেদে সম্প্রদায়ের লোক জানান, জেলা প্রশাসক এবং বাংলাদেশ পুলিশের দেয়া ১৫ দিনের খাবার পেয়েছে তারা। এই ১৫ দিন তাদের খাবার দাবার ভালোই চলছিলো। এখন খাবার শেষ পর্যায়ে। সামনের দিনগুলোতে তারা কি খাবে তাই নিয়ে বেশ চিন্তিত। অথচ মিরকাদিম পৌরসভার ভোটার হয়েও পৌরসভা থেকে তারা কোন ত্রান সহায়তা পায়নি। মিলেনি ব্যক্তি বা রাজনৈনিত নেতাদের দেয়া ত্রান সহায়তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নিম্ন আয়ের মানুষ জানান, ভোটের সময় ভোটের স্লিপ ঘরে ঘরে পৌছানো হয়। এখন কাজ নেই, অর্থ নেই। ঘরে বসে করোনার আতংক নিয়ে খেয়ে না খেয়ে আছি। এখন কেন সরকারী / বেসরকারী খাবার সামগ্রী পাইনা? লোক দেখে, মুছ চিনে বিতরন করা হচ্ছে ত্রান সহায়তা। এখন কেন কোন নেতাদের দেখিনা। তারা আজ কোথায়? অর্থশালীরা কোথায়? নির্বাচন আসলে কোটি কোটি টাকা ছিটায়। ভোট তো জনগনই দেয়। এখন দেশের এই দূযোর্গ সময়ে জনগনকে বাঁচান । আপনাদের ভোট চাইতে হবেনা। আপনার এই দূর্দিনের দান এবং খাদ্য সহায়তা পরবর্তীতে কাজে আসবে।
একাধিক মধ্য বিত্ত পরিবারের সদস্যরাও ক্ষোপ প্রকাশ করে বলেন, আমরা না খেয়েও থাকলেও কারো কাছে বলতে পারিনা। দেশের এই করোনা দূযোর্গ কালীন সময়ে নিম্ন আয়ের মানুষগুলোতে ঠিক মত ত্রান সহায়তা দেয়া হউক। আমাদের ত্রান সহায়তা দরকার নেই। সমাজে নিম্ন আয়ের, হত দরিদ্র এবং প্রকুতপক্ষে যারা প্রাপ্য তারা পেলেই আমরা খুশি। সরকারী ত্রান সহায়তা এবং ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রি যেন নিম্ন এবং মধ্যবিত্তরা সহজে কিনে খেতে পারে সরকার এবং প্রশাসন সেদিন লক্ষ রাখবে। এমনটাই দাবি তাদের।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ফারুক আহাম্মেদ,বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ত্রান সহায়তা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টি বেদে সম্প্রদায়, শহর ,গ্রামঞ্চলের কর্মহীন এবং নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে সরকারী ত্রান সহায়তা পৌছে দেয়া হয়েছে। যতোদিন এই কোভিড ১৯ এর দূযোর্গ থাকবে তততোদিন কর্মহীন এবং নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে। সরকারী ত্রান সহায়তা প্রদানে এবং ১০ টাকা কেজি চাল বিক্রিতে কোন অনিযম হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আলোকিত সংবাদ/এমআরকে
ফজর | ৪:২৬ |
জোহর | ১১:৫৬ |
আসর | ৪:৪১ |
মাগরিব | ৬:০৯ |
ইশা | ৭:২০ |
শিরোনাম