চাঁদে ‘বাড়ি’ বানানোর কাজ কতদূর?
মানুষের মুখে প্রায়ই শোনা যায়, চাঁদ নিয়ে নানা কথা। সত্যিই, ঢাকায় রাস্তায় বসে চাঁদের চিন্তা...
প্রকাশিত: ৪:৫৫ অপরাহ্ণ, ৮ মার্চ, ২০২০
ছবি: আলোকিত সংবাদ
সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ কুমিল্লাল জেলার দুবাই প্রবাসী কামাল হোসেন (২৮)কে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সর্বশান্ত করেছে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের ব্রজেরহাটি গ্রামের সবুজ শেখের মেয়ে সানিয়া (২৪)। এমনকি বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই প্রবাসীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় মোটা অঙ্কের টাকা। সম্প্রতি ঘটনাটি জানাজানি হলে সানিয়ার পরিবার ঢাকা কেরানীগঞ্জের মুরগীবাজারের ভাড়া বাসা ছেড়ে গ্রামের বাড়ী উপজেলার ব্রজেরহাটি গ্রামে এসে গা ঢাকা দিয়েছে। প্রতারক সানিয়া ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন দুবাই প্রবাসী চান্দিনা উপজেলার বাগুর গ্রামের মৃত ফজলুল করীমের ছেলে কামাল হোসেন। সরল বিশ্বাসে প্রেমের ফাঁদে পরে সর্বস্ব প্রেমিকার কাছে সপে দিয়ে এখন তিনি সর্বশান্ত। প্রতারণার শিকার ওই প্রবাসী স্থানীয় লোকজনকে বিষয়টি জানানোর পর প্রতারক সামিয়াসহ তার পরিবার নানা রকম হুমকি দিয়ে আসছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বর্তমানে প্রতারক সামিয়া দুবাইয়ের আবুদাবী শহরের টপ স্টার হোটেল এন্ড ড্যান্স ক্লাবে নর্ত্তকীর কাজ করছে। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ১০ বছর আগে কামাল দুবাইতে যান। প্রায় ১৯ মাস পূর্বে দুবাইতে অবস্থানরত কামাল
হোসেনের সাথে সানিয়ার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে কামাল সানিয়ার রূপ ও স্মার্টনেস দেখে প্রেমে হাবুডুবু খেতে শুরু করে। সেই সুবাদে প্রেমিকের দূর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে কামালের কাছ থেকে টাকা নেয়া শুরু করে সামিয়া। সম্পর্কের কয়েকমাস অতিবাহিত হওয়ার পর সানিয়া কামালকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে কামাল তার পরিবারের লোকজনকে সানিয়ার বাড়ীতে পাঠায় এবং তাকে বিয়ে করার জন্য রাজি হয়। সানিয়া তাদের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কথা জানালে দুবাই থেকে ঘর ভাড়া, মাসিক কিস্তিসহ সাংসারিক যাবতীয় খরচ বহন করতে শুরু করে কামাল। সানিয়া কামালের কাছে তাদের বাড়ীতে ঘর নেই বলে জানালে প্রেমিকার মন রক্ষার্থে কামাল ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে লোক মারফতে ট্রাকে করে কুমিল্লা থেকে ঘর তোলার জন্য সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকার রড, সিমেন্ট, ইট, বালু ও টিন কিনে দিয়ে পাঠায়। এর কিছুদিন পর সানিয়া কামালকে তাদের আর্থিক ঋণের কথা বলে কামালের কাছে দেড় লক্ষ টাকা চাইলে কামাল সানিয়া ও তার মায়ের বিকাশ নাম্বারে দেড় লক্ষ টাকা পাঠায়। কামালের ভালবাসার দূর্বলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সানিয়াকে দুবাই নিতে বলে এবং পাসপোর্ট বানিয়ে কামালের কাছে দেয়। কামাল সানিয়াকে দুবাই নেওয়ার জন্য দেড় লক্ষ টাকা খরচ করে ভিসা এবং টিকিট কনফার্ম করে। কিন্তু সানিয়া অসুস্থ্যতার কারণ দেখিয়ে দুবাই যেতে অনীহা প্রকাশ করে। এতে তার ভিসা এবং টিকিটের টাকা ভেস্তে যায়। এর কয়েকদিন পর সানিয়া কামালের মোবাইলে ফোন করে বলে সে ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে সে দুবাই এসেছে এবং কামালকে তার সাথে দেখা করতে বলে। কামাল ঠিকানা অনুযায়ী দুবাইয়ের আবুদাবী শহরের এন সুপার মার্কেটের সামনে টপ স্টার হোটেলে সানিয়ার সাথে দেখা করতে গিয়ে দেখে সানিয়া ওই হোটেলে নর্ত্তকী ও দেহ ব্যাবসার কাজ করছে। এ দেখে কামাল সানিয়াকে দেশে চলে যেতে বললে সানিয়া বলে, মালিককে ১০ হাজার দেরহাম অর্থাৎ (দুই লক্ষ উনপঞ্চাশ হাজার একশত) টাকা দিলে তাকে দেশে যেতে দিবে এবং সে টাকা পেলে দেশে চলে যেতে রাজী হয়। কামাল তার কথা মত ১০ হাজার দেরহাম সানিয়ার হাতে দেওয়ার পর হোটেলের লোকজন নিয়ে কামালকে মারধর করে হোটেল থেকে তাড়িয়ে দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ঘটনার বিবরণে আরো জানা যায়, কামালকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন অযুহাতে বিভিন্ন সময় তার কাছ থেকে সর্বমোট ১৫ লক্ষ নগদ নেয় সানিয়া। এ ব্যাপারে দুবাই প্রবাসী কামাল হোসেন প্রতারক সামিয়া ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে সাংবাদিকদের জানান। ভুক্তভোগী দুবাই প্রবাসী কামাল হোসেন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, সরল বিশ্বাসে সামিয়াকে ভালোবেসে আমার সারা জীবনের কামাই দিয়েও তাকে পেলাম না। আমাকে বিয়ে করবে বলে কোরআন শরীফে হাত রেখে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েও আমাকে বিয়ে করল না। আমি তার সব চাওয়া পাওয়া মিটিয়েছি। যখন যেটা চেয়েছে সেটাই দিয়েছি। এখন মনে হচ্ছে পৃথীবিতে মানুষকে বিশ্বাস করা পাপ। যদি জানতাম সে আমার সাথে প্রতারণা করে আমার টাকা পয়সা হাতিয়ে নিবে তাহলে কোনদিন এ পথে পা বাড়াতাম না। ৬মাস বয়সে বাবা কে হাড়িয়েছি। ১০ বছর বয়সে মাকে হাড়ালাম। আমি একজন এতিম মানুষ। আমার সাথে এমন হবে আমি ভাবতেও পারিনি। আমি তাদের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করবো। সানিয়ার মাতা হেনা বেগম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাদের বিরুদ্ধে অানিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। যদি সেই ছেলের কাছে কোন প্রমান থাকে সে আমার মেয়েকে টাকা দিয়েছে তাহলে টাকা নিয়ে যাক। আর যদি প্রমান না থাকে তাহলে কিভাবে টাকা নিবে? আপনারা লেখালেখি করেন আমার কোন সমস্যা নাই বলে মুঠোফোন কেটে দেন।
আলোকিত সংবাদ/এমআরকে
ফজর | ৪:২৬ |
জোহর | ১১:৫৬ |
আসর | ৪:৪১ |
মাগরিব | ৬:০৯ |
ইশা | ৭:২০ |
শিরোনাম