আমিনুল ইসলাম, লৌহজং (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ আর মাত্র ৪টি স্প্যান (সুপার স্ট্রাকচার) বসানো হলেই ৬ হাজার ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মাসেতু তার পূর্ণাঙ্গ কাঠামো পাবে। সেই সাথে দৃশ্যমান হবে শতভাগ। এরপর চলবে রেল ও সড়ক পথের জন্য স্ল্যাব বসানোর বাকি কাজ। আসন্ন মহান বিজয় দিবসের আগেই সবগুলো স্প্যান বসানো শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন সেতু কর্তৃপক্ষ। আগামী পরশু ১৯ নভেম্বর সেতুর মাওয়া প্রান্তের ১ ও ২ নম্বর খুঁটিতে ৩৮তম স্প্যান ও ২৩ নভেম্বর ১০ ও ১১ নম্বর খুঁটিতে ৩৯তম স্প্যান বসানোর কথা রয়েছে। গত ১১ নভেম্বর বুধবার পদ্মা সেতুতে ৩৭তম স্প্যান বসানোর ফলে দৃশ্যমান হয়েছে ৫ হাজার ৫৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু। তারও পূর্বে মাওয়া প্রান্তের ২ ও ৩ নম্বর খুঁটিতে ৩৬তম স্প্যানটি বসানো হয়েছে। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আবদুল কাদের বলেন, পদ্মাসেতুর ৩৭তম স্প্যান স্থাপনের পর আমরা আশা করছি আগামী বিজয় দিবসের আগেই ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি সব স্প্যান বসিয়ে দিতে পারবো ইনশাল্লাহ। তিনি আরও বলেন, মাওয়া প্রান্তের প্রথম স্প্যানটি ‘১-এথ স্থাপন করলেই সেতুর মাওয়া প্রান্তের সঙ্গে বন্ধন হয়ে যাবে। এ ছাড়া আগামী ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২ নম্বর খুঁটিতে ৪০তম স্প্যান (স্প্যান ২-ই) ও ১০ ডিসেম্বর সর্বশেষ ৪১ তম স্প্যান (স্প্যান ২-এফ) ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটির ওপর বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, পদ্মার মাওয়া প্রান্তে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের বাইরে স্টক ইয়ার্ডে রাখা আছে ৩টি স্প্যান। বাকি দুটি স্প্যানও প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে ওয়ার্কশপের ভিতরে।
পদ্মায় এ মূূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি)। নদী শাসনের কাজ করছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন। সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আব্দুল মোমেন লিমিটেড। সেতুটিতে স্প্যান বসানোর পাশাপাশি সেতুর অন্যান্য কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে বসানো হয়েছে ১ হাজার ১৬৬টি ও ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১ হাজার ৬৪৬টির বেশি বসানো হয়ে গেছে। সেতুর উভয় প্রান্তে ভায়াডাক্টের ৪৮৪টি সুপার-টি গার্ডারের মধ্যে স্থাপন হয়েছে ২৫৮টি।৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি ছিল ৯০ দশমিক ৫০ ভাগ। সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বরে এবং শেষ হওয়ার সংশোধিত শিডিউল ২০২১ সালের জুন মাসে। যদিও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে কিছুটা ধীরগতি আসায় সেতুর কাজ শেষ হতে আরও বেশি সময় লাগতে পারে।
Post Views:
৯৮৮