চাঁদে ‘বাড়ি’ বানানোর কাজ কতদূর?
মানুষের মুখে প্রায়ই শোনা যায়, চাঁদ নিয়ে নানা কথা। সত্যিই, ঢাকায় রাস্তায় বসে চাঁদের চিন্তা...
প্রকাশিত: ৪:৪৮ অপরাহ্ণ, ১৮ জুন, ২০২০
রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২০ দিনে প্রায় এক হাজার গরু মারা গেছে। আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের রংপুর বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. হাবিবুল ইসলাম প্রাথমিকভাবে এ রোগের নাম লাম্পি স্কিন রোগ বলে জানিয়েছেন।
কোরবানির ঈদের আগে আকস্মিকভাবে অজ্ঞাত রোগে গরু আক্রান্ত হওয়ায় চাষীসহ খামারিয়া চরম আতঙ্কে পড়েছে। রংপুরের জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণপুর, রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর, তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা, ইকরচালি সয়ার কাউনিয়া, পীরগাছা, মিঠাপুকুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে খামারি ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথমে গরুর তীব্র মাত্রার জ্বর আসে। এরপর গরুর শরীরে গোটা গোটা হয়ে যায়। গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পানি নামে। ফলে গরুর খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে গিয়ে কোনও প্রতিকার পাচ্ছে না গবাদিপশু পালনকারীরা। গ্রামের পল্লী চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হয়ে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও ইনজেকশন দিলেও তেমন কোনও উপকার হচ্ছে না।
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালির কৃষক খলিল বলেন, তার তিনটি গরু অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু বড় করেছি একটু বেশি দাম পাবার আশায় কিন্তু গরুর সারা শরীরে গোটা গোটা দানার মতো ফুলে যাওয়ায় কোরবানির হাটে দাম পাওয়া যাবে না। একই কথা জানালেন সয়ার এলাকার কৃষক সালাম, আবদুল বাকীসহ কাউনিয়া উপজেলার আজিজুল ইসলামসহ অনেকে চাষি।
তারা জানান, বাছুরগুলো আক্রান্ত হলে ২-৩ দিনের মধ্যেই মারা যাচ্ছে। তাদের এলাকায় গত ৭ দিনে ৭টি গরু ও বাছুর মারা গেছে। অন্যদিকে রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর এলাকার গিয়ে দেখা গেছে- শত শত গরু গোয়াল ঘরে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। কৃষক সখিনা বেগম জানান, চারটি গরু কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে বড় করেছিলাম। কিন্তু দুটি গরু অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ায় চাহিদার অর্ধেক দামও পাবো না।
রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের দেয়া তথ্য মতে, উত্তরের আটটি জেলার প্রতিটি উপজেলায় এখন গরুর এই দুরারোগ্য ব্যাধি দেখা দিয়েছে। কোন প্রতিষেধক না থাকায় পালিত গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন এই অঞ্চলের মানুষ। অনেকে না বুঝেই পল্লী চিকিৎসককে মোটা অংকের টাকা দিয়ে হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত। তবে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর বলছে, একমাত্র সচেতন থাকাই এই রোগের প্রতিকার।
রংপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এএসএম সাদেকুর রহমান জানান, তাদের অফিসে প্রতিদিনই খামার মালিক ও কৃষকরা অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত গরু নিয়ে আসছেন। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। তবে মশা-মাছির আক্রমণ থেকে রক্ষা ও পরিচর্যা করলে কিছুটা হলেও রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতর বলছে, সংক্রমকব্যাধি লাম্পি রোধে গোয়াল ঘরের মশা-মাছি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সচেতন থাকতে হবে। সার্বিক বিষয়ে জানতে রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক ডা. মো. হাবিবুল হক জানান, এ রোগের প্রকৃত কোন ওষুধ নেই। এ রোগটি ইতিপূর্বে ঝিনাইদহে দেখা দিয়েছিল এখন রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ গরুকে আমরা প্রতিষেধক ইনজেকশন দিয়েছি। তবে কৃষকদের সচেতনতা বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মাহবুব আলম অনেক আগে সাংবাদিকদের বলেছেন, মূলত মশা ও মাছির মাধ্যমে ভাইরাসজনিত রোগটি সারাদেশে সম্প্রসারিত হচ্ছে। আগে এ ধরনের রোগ দেশে ছিল না। ওষুধেরও তাই প্রয়োজন পড়েনি। লাম্পি স্কিন রোগের চিকিৎসায় গোটা পক্সের ভ্যাকসিন প্রাথমিকভাবে কাজে লাগতে পারে। তবে এ ভ্যাকসিনেরও যথেষ্ট অভাব রয়েছে দেশে। এ অবস্থায় দ্রুত রোগটি প্রতিরোধের ব্যবস্থা না নিলে ঝুঁকির মধ্যে পড়বে দেশের প্রাণিসম্পদ খাত ।
ফজর | ৪:২৬ |
জোহর | ১১:৫৬ |
আসর | ৪:৪১ |
মাগরিব | ৬:০৯ |
ইশা | ৭:২০ |
শিরোনাম