চাঁদে ‘বাড়ি’ বানানোর কাজ কতদূর?
মানুষের মুখে প্রায়ই শোনা যায়, চাঁদ নিয়ে নানা কথা। সত্যিই, ঢাকায় রাস্তায় বসে চাঁদের চিন্তা...
প্রকাশিত: ৩:০৬ অপরাহ্ণ, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
ছবি: আলোকিত সংবাদ
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় ৩০ বছরেও এক মুঠো মাটি পড়েনি ৭ কিলোমিটার রাস্তায়। ১৩ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের চরম ভোগান্তি। ভয়াবহ বন্যায় কবলে ১৯৮৮ সালে গ্রামে একটি আভ্যন্তরিন সড়ক ভেঙে রাস্তা ও সমতল ভূমি একাকারে পরিণত হয়েছে। এ খানাখন্দের জরার্জীণ একটি মাটির রাস্তায় গত ৩০ বছরেও এক মুঠো মাটি পড়েনি ৭ কিলোমিটার রাস্তার। লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া নজরেও পড়েনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের।
এ বন্যায় ভাঙনের ফলে এলাকার ১৩টি গ্রামের মানুষের উপজেলা সদরে যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি নিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে ভোগছে এলাকাবাড়ী। উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর দাসেরবাড়ী গ্রামের মধ্য দিয়ে চর শিশুয়া পশ্চিমপাড়া গ্রাম হয়ে বেলাল পাগলার মসজিদ পযর্ন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার কাঁচা সড়কটি ভয়াবহ বন্যায় সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এর ফলে অন্তত ১৩টি গ্রামের মানুষের খানাখন্দে সড়কে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এই সড়কটি দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কারের বা উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগায় গ্রামের মানুষর মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
চর শিশুয়া গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ আব্দুল খালেক মন্ডল এই প্রতিবেদনকে জানান, ১৯৮৮ সালের বন্যায় চরাঞ্চলের ১৩টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র কাঁচা সড়কটি ভেঙে পানিতে ভেসে যায়। এই সড়কটি বন্যায় বিলীন হয়ে যাওয়ায় বর্ষাকালে মানুষের বসতবাড়ীর উঠান ও আঙিনা দিয়ে অতি কষ্টে গরু, ছাগল, ক্ষেতের ফসল নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এ সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় ও সমতল ভূমিতে পরিণত হওয়ায় বন্যার সময় যাতায়াতের অন্যতম চলাচলের একমাত্র যানবাহন হিসাবে নৌকা ব্যবহৃত হয়।
এ সময় অধিকাংশ চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দিতেই থাকতে হয়। এর ফলে উপজেলা সদরে হাট-বাজারে যাতায়াতসহ স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে চরাঞ্চলের মানুষ। শুকনো মৌসুমে রাস্তা না থাকলেও মানুষ ক্ষেতের আইল দিয়ে যেদিক ইচ্ছা যাওয়া যায় চলাফেরা করতে পারে। র্দীঘদিন ধরে মানুষের চলাচলের চরম ভোগান্তির শিকার হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সুদৃষ্টি পড়েনি। এ রাস্তাটি প্রতি বছর বন্যার পানির স্রোতে ভেঙে ভেঙে মাটি সরে যাওয়ায় দু’পাশের গাছগুলো মরে গেছে।
তিনি আরো জানান, গত বন্যায় চর শিশুয়া গ্রামের মৃত ছাত্তার মুন্সির ছেলে আব্দুল খালেক অসুস্থ হয়ে পড়লে নৌকা পারাপার করার সময় মারা যায়। এই সড়কটির সাথে সম্পৃক্ত গ্রামগুলো হলো রাখাল গাছা, ছাতায়ি, চর আদ্রা, জামিরা কিছু অংশ, সাদা পলট, বল্লকপাড়া, শালগ্রাম, মাজনাবাড়ি, শিশুয়া পশ্চিম অংশ, উকুনেরছা ও কুমরাবাড়ী।
গত ৩০ জানুয়ারি সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, উপজেলা সদর ঝালুপাড়া ব্রিজপাড় পাকা রাস্তা সংলগ্ন চর দাসেরবাড়ী গ্রাম থেকে চর শিশুয়া পশ্চিমপাড়া আজগর মন্ডলের বাড়ি পর্যন্ত খানাখন্দরে ভরা রাস্তাটির নিশানা পাওয়া গেলেও আজগর আলী মন্ডলের বাড়ি থেকে বেলালের মসজিদ পর্যন্ত সড়কটি এখন সরু রাস্তায় পরিণত হয়েছে। এ সরু রাস্তার মাঝে একটি কালর্ভাট সেতু থাকায় পূর্বে সড়ক ছিল বলে বুঝা যায়। কেন এই সড়কে ভাঙনের সংস্কার বা উন্নয়ন করা হচ্ছে না এ নিয়ে রহস্যের ধুম্রজালে রয়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ।
ওই গ্রামের স্কুল পড়ুয়া শামীম হোসেন, আনিছুর রহমান, ইয়াসিন মিয়া, জিসান আহম্মেদসহ আরো অনেকেই বলে, সড়ক না থাকায় গ্রাম থেকে উপজেলা সদরে স্কুলে যাইতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। বন্যার ও বর্ষার সময় কয়েক মাস আমরা স্কুল কলেজে যাইতে পারিনা। এতে আর ছাত্রদের চেয়ে আমরা সব সময়ই পিছিয়ে থাকি।
সাতপোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি ভেঙ্গে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পরায় এলাকার মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ দুর্ভোগ লাঘব করতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছি। তবে ৩০ বছর ধরে রাস্তা সংস্কার করা হয়নি এটা ভুল বলেছে এলাকার মানুষ। আজগর আলীর বাড়ি থেকে বেলালের মসজিদ পর্যন্ত এ রাস্তার মধ্যে একটি কালভার্ট সেতু রয়েছে স্বীকার করে বলেন, বিশেষ কোন সরকারি বড় বরাদ্দ ছাড়া ওই রাস্তা করা সম্ভব নয়। তবে দাসেরবাড়ী থেকে চর শিশুয়া আজগর আলী মন্ডলের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত বা সংস্কার করা হবে। এ রাস্তাটুকু হলে এলাকার মানুষেরা যাতায়াতে কিছুটা সুবিধা পাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিহাব উদ্দিন আহমেদ বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ওই এলাকার মানুষের জন্য রাস্তাটি দিয়ে প্রাথমিকভাবে চলাচলের ব্যবস্থার জন্য সংস্কার করে দেওয়া হবে। পরে রাস্তাটি পূর্ণ নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আলোকিত সংবাদ/এমআরকে
ফজর | ৪:২৬ |
জোহর | ১১:৫৬ |
আসর | ৪:৪১ |
মাগরিব | ৬:০৯ |
ইশা | ৭:২০ |
শিরোনাম