মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে জমির সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের হিরনের খিলগাঁও গ্রামের সামসুদ্দিন শেখ ওরফে সামসু শেখের ছেলে শাহা আলম (৫০)। জমির সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে মারধর করে উল্টো প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী হিরনের খিলগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আলি হোসেন শেখের ছেলে মোঃ আমির হোসেন। স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের হিরনের খিলগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সামসুদ্দিন শেখ ওরফে সামসু ও তারই চাচাত ভাই প্রতিবেশী আলি হোসেন শেখের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়াদী নিয়ে বিরোধ ও শত্রুতা চলছিলো। গত ১৬ মার্চ বিকাল অনুমান ৫ টার দিকে হিরনের খিলগাও গ্রামস্থ হিরনের খিলগাঁও এতিমখানা মাদরাসা সংলগ্ন আলী হোসেন শেখের মালিকানা জমির পার্শ্ববর্তি জমির মালিক সামসুদ্দিন শেখ ওরফে সামসু শেখের ছেলে শাহা আলম, নুর ইসলাম ও নাফিজ তাদের জমি আমিন দিয়ে পরিমাপ করার সময় জোর পূর্বক আলী হোসেন শেখের মালিকানা জমির খানিক অংশ দখলে নেয়। এতে আলী হোসেন শেখের দুই ছেলে আমির হোসেন ও আক্তার হোসেন বাধা দিতে গেলে সামসুদ্দিন শেখ ওরফে সামসুর তিন ছেলে শাহা আলম, নাফিজ ও নুর ইসলামদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সামসুদ্দিন শেখ ওরফে সামসুর তিন ছেলে শাহা আলম, নাফিজ ও নুর ইসলাম লোকজন নিয়ে এসে আমির হোসেন ও আক্তার হোসেনকে এলোপাথারি ভাবে পিটিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসার জন্য পাঠায়। এ ঘটনার ৪ দিন পর গত ২০ মার্চ শাহা আলম বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় আলী হোসেন শেখনসহ তার চার ছেলে আমির হোসেন (৪০), আক্তার হোসেন (৩০), আনোয়ার হোসেন ওরফে আনু (৫০), আকরাম হোসেন, মেয়ের জামাই জালাল শেখ (৫০), ও নাতি রোমান (৩০)দের বিবাদী করে ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৪২৭/৫০৬/১১৪ ধারায় মামলা দায়ের করে। যার নং-২৪। মামলা দায়েরের পর আক্তার হোসেন নামে একজনকে গ্রেফতার করে কোর্টে পাঠিয়েছে পুলিশ। বর্তমানে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে হয়রানীর ভয়ে পলাতক রয়েছে মর্মে স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়। ভুক্তভোগী আমির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তারা আমিন নিয়ে এসে জোর পূর্বক আমাদের অনেকখানী জমি দখলে নিয়ে নেয়। এসময় আমি তাদেরকে বাধা দিতে গেলে নুর ইসলাম,শাহা আলম ও নাফিজদের সাথে কথাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তারা লোকজন নিয়ে এসে আমাদের মারধর করে উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়। আমরা এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে তারা আমাদের মামলা না নিয়ে আমার ছোট ভাই আক্তারকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে নিয়ে মামলা দিয়ে জেলে পাঠায়। রোমার নামে যাকে মামলায় আসামী করেছে সে আমার ভাগনে কিন্ত সেতো ঘটনার সময় ছিলো না।ভুক্তভোগী রোমানের কাছে এ ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ ঘটনার আগামাথা কিছুই জানি না। আমার মামাদের সাথে তাদের চাচাত ভাইদের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিলো জানতাম। তাদের সাথে গ্যাঞ্জামের কথা মায়ের কাছে শুনেছি। কিন্তু সেখানে আমাকে কেন জড়ালো সঠিক বুঝলাম না। আমিতো কারো পক্ষেই নাক গলাতে যাইনি বা যাবার প্রয়োজনও মনে করি না। আর ঘটনার সময় আমি সেখানে ছিলামও না। মামলার বাদী শাহা আলম মারধর ও মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা আমাদের জমি আমিন দিয়ে মেপে পিলার লাগাই। বিকালে তারা আমাদের জমির পিলার উঠাইয়া গেঞ্জাম লাগায়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, রোমান তাদের ভাইগনা তাই মামলার প্রয়োজনে তাকে মামলায় আসামী করেছি। মামলা করতে গেলে এরকম দুচারজন বেশী দিয়েই মামলা করতে হয় না হলে মামলা পোক্ত হয় না। এ ব্যপারে সিরাজদিখান থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মোঃ আজগর হোসেন জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। একজকে গ্রেফতার করে কোর্টে পাঠানো হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।