সোমবার ৯ই জুন, ২০২৫ ইং , ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৩ই জিলহজ্জ, ১৪৪৬ হিজরী

সিরাজদিখানে স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফেলতির কারণে ১৪ বছর যাবৎ আটকে আছে আয়া আয়েশা আক্তারের বকেয়া বেতন ভাতার টাকা!

নিজস্ব প্রতিবেদক  আলোকিত সংবাদ

 প্রকাশিত: ৫:৩৭ অপরাহ্ণ, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৯

ছবি: আলোকিত সংবাদ

 

সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রাজদিয়া আঃ জাব্বার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফেলতির কারণে ১৪ বছর ধরে আটকে আছে ওই স্কুলের আয়া আয়শা আক্তার (৫০) এর বেতন ভাতার ৫৩,৩৩৭ টাকা। মামলা করে চাকরী ফিরে পেলেও পায়নি বরখাস্তকালীন বেতন ভাতার টাকা! এমনকি বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক ম্যানেজিং কমিটিকে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে ইং-০৫/০২/২০০৩ থেকে ইং- ৩০/০৬/২০০৫ পর্যন্ত বেতন ভাতা পরিশোধ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও কোন রকম তোয়াক্ত না করেই ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বেতন ভাতার টাকা। দীর্ঘদিন যাবৎ আটকে থাকা বকেয়া বেতন ভাতার টাকা পেতে বারংবার ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষকদের কাছে গিয়ে কোন লাভ হয়নি আয়শা আক্তারের। তারিখের পর তারিখ দেয়াই যেন ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষকদের কাজ! এমনকি বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যাথা নেই বললেই চলে। বেচে থাকার জন্য চাকরীটাই যেন আশয়া আক্তারের শেষ সম্বল। আয়শা আক্তার উপজেলার পূর্ব রাজদিয়া গ্রামের মৃত খালেক মোল্লার স্ত্রী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৯ সালে আয়শা আক্তার রাজদিয়া আঃ জাব্বার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়া পদে চাকুরীতে যোগদান করেন। ২০০৩ সালে ওই স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মুজিবুল হক স্কুলের উপবৃত্তির টাকা আতœসাতের জন্য একটি অঙ্গীকার নামা লিখে আয়েশা আক্তার সহ স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষিকাকে স্বাক্ষর দিতে বলেন। কিন্তু আয়শা আক্তার ওই অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর না করায় প্রধান শিক্ষক ইং-২৩/১১/২০০২ তারিখ কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে এবং ইং-০৫/০২/২০০৩ তারিখে সাময়িক বরাখাস্ত করেন। আয়শা আক্তার প্রধান শিক্ষকের নোটিশের লিখিত জবাব দেওয়ার পরও প্রধান শিক্ষক বে-আইনি ভাবে ইং-২৭/০৩/২০০৩ তারিখে চুরান্ত ভাবে বরখাস্ত করেন। চুরান্ত ভাবে বরখাস্ত হওয়ার পর আয়শা আক্তার জেলা প্রশাসক বরাবর চাকুরী পুনঃ বহালের আবেদনের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কর্তৃক ম্যানেজিং কমিটি বরাবর নোটিশ ইস্যূ হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হয়। তদন্তে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মুজিবুল হক আয়া আয়শা আক্তারকে বে-আইনি ভাবে বরখাস্ত করে মর্মে প্রমানিত হয়। তারপরও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোন ব্যাবস্থা গ্রহন না করায় আয়শা আক্তার প্রতিকার পাওয়ার জন্য বিজ্ঞ আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন। যার নং-২৬/০৩। ওই মামলায় বিজ্ঞ আদালত প্রধান শিক্ষক কর্তৃক আয়শা আক্তারকে চুরান্ত বরখাস্ত বে-আইনী, ক্ষমতা বহির্ভূত ও অকার্য্যকর এবং বাতিল মর্মে ঘোষনা করে সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আয়শা আক্তারকে তার সমুদয় বকেয়া বেতনভাতাদী প্রদানসহ ২৮/০২/২০০৫ তারিখ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে চাকুরীতে স্ব-পদে পুনঃ বহালের জন্য নির্দেশ প্রদান করে মামলাটি নিস্পত্তির আদেশ দেন। এরপর তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাফিজ উদ্দিন হাওলাদার আপিল করেন এবং আপিলেও আয়শা আক্তারের পক্ষে বিজ্ঞ আদালত রায় দেন। বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক আয়শা আক্তারকে তার চাকুরী এবং বকেয়া বেতনভাতা দেয়ার নিদের্শ দিলেও চাকুরী ফিরে পেয়েছে আয়শা আক্তার। কিন্তু বরখাস্তকালীন বেতন ভাতার টাকা যেন তার কাছে সোনার হরিন! বেতন ভাতার টাকা আদৌ কি আয়শা আক্তার পাবে? এটাই একমাত্র তার প্রশ্ন। আয়শা আক্তারের ছেলে মোঃ আলমগীর মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, ২০০৩ সালের দিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুজিবুল হক এবং ম্যানেজিং কমিটির লোকজন উপবৃত্তির টাকা মেরে দেওয়ার জন্য একটা অনুলিপি তৈরি করে। সবার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয় এবং আমার মাকেও ওই অনুলিপিতে স্বাক্ষর দিতে বলে। ওই অনুলিপিটা অবৈধ দেখে আমার মা স্বাক্ষর দেয় নাই বলে বিভিন্ন ইস্যূ তৈরি করে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মুজিবুল হক এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাফিজ উদ্দিন হাওলাদার উনারা দুজনে মিলে বিভিন্ন অজুহাতে আমার মাকে সাময়িক বরখাস্ত করার পর অবৈধ ভাবে চুরান্ত বরখাস্ত করেন। আমার মা কোন দিক না পেয়ে আদালতে মামলা করে। ওই মামলায় আমার মায়ের পক্ষে আদালত রায় দেয়। আমার মা রায় পাওয়ার পর ওনারা পরে আপিল করে। আপিলেও আমার মায়ের পক্ষে রায় হয় এবং আমার মায়ের চাকুরী ও বরখাস্তকালীন বেতনভাতার টাকা স্কুল কর্তৃপক্ষকে পরিষোধ করার নির্দেশ দেন। কিন্ত তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির উপস্থিতিতে গত-০৩/১০/২০০৫ ইং তারিখে স্কুলে একটি সভা হয়। ওই সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে প্রধান শিক্ষককে আমার মায়ের বকেয়া বেতনভাতার টাকা পরিষোধ করার জন্য প্রয়োজন ব্যাবস্থা গ্রহন করার জন্য বলে এবং একটি বিলও তৈরি করে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের গাফেলতির কারণে আমার মায়ের বেতনভাতার টাকা আমরা আজও পর্যন্ত পাইনি। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আমার আবেদন তারা যেন, বিষয়টি আমলে নিয়ে আমার মায়ের বকেয়া বেতনভাতার টাকা ফেরৎ পেতে সহযোগীতা করেন। রাজদিয়া আঃ জাব্বার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ হানিফ জানান, আপনার কাছে কে অভিযোগ করেছে ? আমি তাকে এখনি ফোন করছি। পরে নিউজ করেন। তার এত বড় সাহস? এব্যাপারে রাজদিয়া আঃ জাব্বার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এস.এম সোহরাব হোসেন জানান, আমি সভাপতি ১ বছর থাকাকালীন কারো বেতন বাকি নাই। তবে আমার আগে কারো বেতন ভাতার টাকা বাকী থাকতে পারে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী আব্দুল ওয়াহিদ মোহাম্মদ সালেহ জানান, আমি এমন কোন ঘটনা জানিনা, প্রধান শিক্ষক ও স্কুল সভাপতি জানতে পারে। ওনাকে আমার কাছে আসতে বলিয়েন আমি বিষয়টি দেখব।

আলোকিত সংবাদ/এমআরকে

বাংলাদেশে কোরোনা

সর্বশেষ (গত ২৪ ঘন্টার রিপোর্ট)
আক্রান্ত
মৃত্যু
সুস্থ
পরীক্ষা
সর্বমোট

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস

বাংলাদেশে

আক্রান্ত
সুস্থ
মৃত্যু

বিশ্বে

আক্রান্ত
সুস্থ
মৃত্যু
Exim Bank

নামাজের সময়সূচি

সোমবার ৯ই জুন, ২০২৫ ইং
ফজর ৪:২৬
জোহর ১১:৫৬
আসর ৪:৪১
মাগরিব ৬:০৯
ইশা ৭:২০
সূর্যাস্ত : ৬:০৯সূর্যোদয় : ৫:৪৩
DHAKA WEATHER

আর্কাইভ

June 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  

শিরোনাম

শিরোনাম
error: Content is protected !!