চাঁদে ‘বাড়ি’ বানানোর কাজ কতদূর?
মানুষের মুখে প্রায়ই শোনা যায়, চাঁদ নিয়ে নানা কথা। সত্যিই, ঢাকায় রাস্তায় বসে চাঁদের চিন্তা...
প্রকাশিত: ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ, ২২ মে, ২০২০
ছবি: আলোকিত সংবাদ
সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ দেশব্যাপী মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাবে যেভাবে নুয়ে পড়েছে দেশের ব্যবসা বাণিজ্য তদ্রƒপ দেশের গ্রাম গঞ্জে ও এর প্রভাব পড়েছে।প্রভাব পড়েছে অল্প পরিসরে মেহেদী চাষিদের লাগানো কিছু মেহেদীর কৃষিখাতেও। মুন্সীগঞ্জ সিরাজদিখানের বালুচরে ব্যাপকভাবে মেহেদী চাষ হয়।এখানকার মেহেদী ঢাকা সহ দেশের অধিকাংশ জেলায় চাহিদা পূরণ করে। প্রত্যেকটি ঈদের বাজারে থাকে এর চাহিদা সবচেয়ে বেশী তবে করোনার কারণে ঢাকায় মানুষ নেই দোকান পাট বন্ধ তথা দেশের এই লকডাউন পরিস্থিতিতে মেহেদী চাষিদের অবস্থা তেমন ভালো নেই বলেই জানান মেহেদী চাষি আব্দুল বারেক। সিরাজদিখানে ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে মাহে রমজানের পনেরো রোজা থেকেই মেহেদী চাষী ক্রেতা বিক্রেতাদের ব্যস্ততা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়।ঈদ যত ঘনিয়ে আসে মেহেদী চাষীদের ব্যস্ততা ততোটা ব্যপকতা রূপ নেয়।তখন আর শুধুমাত্র একক মেহেদী চাষী কেন্দ্রীক ব্যবসাটা সীমাবদ্ধ থাকেনা ।ঈদের দিনক্ষণ যত ঘনিয়ে আসে মেহেদী চাষীদের পরিবারের সবাই হাত বাটায় মেহেদী কাটা থেকে শুরু করে আঁটিবাধা বুজারূপে প্রস্তত করা থেকে বাজারে নিয়ে বিক্রি করা পর্যন্ত।কারণ মেহেদী ব্যবসায়ীক ভাবে সবচাইতে বেশী বেচাকেনা হয় ঈদের বাজারে এবং রমজানের আর্ধেক মাস থেকেই একটা ভিন্ন রকম আনন্দ উল্লাস উল্লেখযোগ্য ভাবে দেখা দেয় মেহেদী চাষীদের পরিবারে।কিন্ত এবার তেমনটা নজরে পড়েনি।কোনমতে মেহেদী ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।সেখানেও আছে বাঁধা বিপত্তি কখনো যানবাহন চলাচল বন্ধ কখনো ঢাকায় নিয়ে মেহেদী বিক্রি করার কোন ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছেন না এই ভয়াবহ করোনাকালে। বলাবাহুল্য এখন আর বিয়েতে কষ্ট করে কেউ কন্যার দুহাত রাঙানোর জন্য মেহেদি বাটে না। হাতের কাছেই আছে বিভিন্ন কো¤পানির কৃত্রিম মেহেদির টিউব। কিন্তু তাই বলে কি বাটা মেহেদির কদর শেষ? না তা নয়। এখনও বিভিন্ন বয়সী নারী এমনকি পুরুষদের কাছেও বাটা মেহেদির কদর বেড়েছে। হাত আর পা রাঙানোর পাশাপাশি মেহেদী এখন ব্যবহার হচ্ছে মাথায়, অনেকটা ওষুধের মতো। কারও চুলে পাক ধরেছে তাই একটু কায়দা করে মেহেদী লাগিয়ে মাথার চুলটা রাঙিয়ে নেন। এ ছাড়া মাথার খুশকি দূর করতে, রাজ্যের চাপে মাথা গরম হয়ে গেলে মাথাটা একটু ঠান্ডা করতেও এটি ব্যবহার করছেন অনেকে। মেহেদী গাছের ফুল থেকে তৈরি হয় সুগন্ধি তেল।তবে করোনার মহামারী কারণে এসব কর্মকান্ড এখন একেবারেই স্থগিত হওয়ায় বিপাকে পড়েছে সিরাজদিখানের মেহেদী চাষিরা। সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের চান্দের এলাকায় দিন দিন যেন মেহেদেী চাষের কদর বেড়েই চলেছে আর ঈদে এর ব্যাপকতা রূপ নেয় সীমাহীন ভাবে। এই গ্রামগুলোতে অন্যান্য শাকসবজি ও ফসলের মতোই সারা বছর বাড়ির আশপাশে অনেক এলাকা নিয়ে চাষ হচ্ছে মেহেদীর।প্রতি বিঘা জমিতে মেহেদীর বিক্রি মূল্য হয় ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা আর একবিঘা জমির মেহেদী বছরে ছয়বার বিক্রি করা যায় সাচ্ছন্দে তবে পবিত্র ঈদে অন্যন্য দ্রব্যমূল্যের মতো মেহেদীর বিক্রি ও বেড়ে যায়।অন্যন্য সময়ের তুলনায় পবিত্র ঈদে মেহেদীর বাজারদর ও থাকে অন্যন্য ঈদ সামগ্রীর মতো তুঙ্গে। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মহা পবিত্র দুটি ঈদে মেহেদীর চাহিদা থাকে অন্য সময়ের চেয়ে আরো বেশী চান্দের চর গ্রামের মেহেদী চাষী মোঃ দীন ইসলাম জানান,মেহেদী চাষে তেমন লোকসানের আশংকা নেই জমিতে একবার মেহেদী রোপণ করলে যুগের পর যুগও মেহেদী গাছ মরেনা,সময় মতো পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিচর্যা করলে এক জমিতে প্রথম রোপণ করা মেহেদী বেঁচে থাকে যুগের পর যুগ।আর ঈদ মৌসুমে আমারা পুরা বছরে যা মুনাফা করি এই এক ঈদেই আমরা আরো ভালো কামাই করি।কিন্ত এবার লোকসান আর লোকসান ঢাকায় মানুষ নাই মেহেদী বিক্রি করবো কার কাছে মানুষের আনন্দ নাই কাজ নাই তারাই মেহেদী নিয়ে কি করবে। মেহেদী বেপারী আঃ বারেক জানান,আমরা আগে মাথায় মেহেদীর বুজা নিয়ে ঢাকা এবং পুরান ঢাকার অলিগলিতে খুচরা ফেরি করে বিক্রি করতাম।তবে এখন আর সেভাবে বিক্রি করা লাগেনা এখন ঢাকার বাসাবুক,খিলগাঁও,শান্তিনগর, মুগদা,মৌলভীবাজার নয়াবাজার,মেহেদীর দোকান আছে আমরা সে দোকানে পাইকারী দামে বিক্রি করি।ঈদে আমাদের চাহিদা থাকে অনেক তবে এবার আর কোনকিছুই হচ্ছেনা।কোনমতে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করে শুধু খরচের টাকাটা আনা যায় মাত্র। সিরাজদিখান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় জানান সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের চান্দের চরে প্রায় একশটি পরিবার মেহেদী চাষের সাথে জড়িত তবে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে মেহেদী চাষীদের কোন সরকারি অনুদান দেওয়া হয়না মেহেদী চাষ স¤প্রসারণের জন্য শুধু তাদের পরামর্শ ও কৃষকদের নিয়ে উঠান বৈঠক করা হয় মাত্র।কিন্ত করোনার জন্য এবার অন্যান্য চাষিদের মতো মেহেদী চাষিদের অবস্থাও খারাপ।
আলোকিত সংবাদ/এমআরকে
ফজর | ৪:২৬ |
জোহর | ১১:৫৬ |
আসর | ৪:৪১ |
মাগরিব | ৬:০৯ |
ইশা | ৭:২০ |
শিরোনাম