চাঁদে ‘বাড়ি’ বানানোর কাজ কতদূর?
মানুষের মুখে প্রায়ই শোনা যায়, চাঁদ নিয়ে নানা কথা। সত্যিই, ঢাকায় রাস্তায় বসে চাঁদের চিন্তা...
প্রকাশিত: ৬:১০ পূর্বাহ্ণ, ৩ জুন, ২০২০
সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ বর্ষা আসতে না আসতেই মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে নৌকা তৈরীর ধুম পড়ে গেছে। আগের মতো এখন আর নৌকার চাহিদা নেই। তবু জেলার সিরাজদিখান উপজেলার নীচু অঞ্চলের বাসিন্দাদের বর্ষায় যাতায়াতের ভরসা ওই নৌকা। তাই তো সিরাজদিখান বাজার, ইছাপুরা ও তালতলা বাজারে নৌকা তৈরীতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কারিগররা। শুধু মাত্র বর্ষা মৌসুমকে ঘিরেই এ কারিগররা নৌকা তৈরীতে পুরো সময় ব্যয় করছে। বর্ষা শেষে এ সব কারিগর তথা কাঠমিস্ত্রি ঘর ও আসবাপত্র তৈরীতে নিজেদের মনোনিবেশ করে থাকেন।একদা বর্ষা এলেই সিরাজদিখান উপজেলা জুড়ে পালতোলা নৌকা চলত। এছাড়া হাট-বাজার থেকে মালসামগ্রী ও জমি থেকে ধান-পাট কেটে আনা নেওয়ায় ও স্কুল-কলেজ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াতেও ডিঙ্গি নৌকার ব্যবহার হতো। আর এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি এবং যাতায়াতের জন্য ব্যবহার হতো কোষা নৌকার। তবে এখন আর আগের মত রকমারি সব নৌকার ব্যবহার নেই । সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের পাশে গড়ে উঠেছে কোষা নৌকা তৈরী ও বিক্রির বাজার। একই সঙ্গে সিরাজদিখান বাজার ও তালতলা বাজারে নৌকা তৈরী ও বিক্রির ধুম পড়েছে। প্রতিদিন দুর-দুরান্ত থেকে ক্রেতারা ছুটে আসছে এখানে। তারপর পসন্দ মতো কোষা নৌকা কিনে নিচ্ছেন ক্রেতা সাধারণ। সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়নের কারনে দিন দিন নৌকার ব্যবহার কমে যাওয়ায় এ পেশার সঙ্গে জড়িত কারিগরদের টিকে থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের কৃষ্ণ মন্ডল ৩০ বছর ধরে নৌকা তেরী করে আসছে। ৫৫ বছরের এ কারিগর জানান, হঠাৎ করেই বর্ষার পানি বেড়ে যাওয়ায় নৌকা বিক্রি বেড়ে গেছে। এখন চাম্বল ও কড়ই কাঠেরই নৌকা তৈরী করে থাকে। তিনি ৮ হাত থেকে ১২ হাত পর্যন্ত দৈর্ঘ্য নৌকা তৈরী করে থাকেন। তবে কারো প্রয়োজনে তার চেয়েও অনেক গুন বড় নৌকা চুক্তিতে তৈরী করেন তিনি। ৮ হাতের একটি নৌকা বাজারে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হয় । ১০ হাতের নৌকা ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকায় বাজারে বিক্রি করে থাকেন তিনি। দিনে ১০ থেকে ১২ টি নৌকা বিক্রি করা সম্ভব হয়। একেকটি নৌকা বিক্রি করে খরচ বাদে হাতে থাকে ২০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা। তিনি আরো জানান, শুধুমাত্র বর্ষা এলেই তিনি নৌকা তৈরী করে থাকেন। বছরের বাকী সময় তিনি কাঠমিস্তির কাজ করেন। বর্ষা আসতেই এ বছর তিনি চাম্বল ও কড়ই কাঠের সঙ্গে রুয়া, বাঘা, বাটাম আর সানি দ্বারা গড়ছেন একেকটি নৌকা।বসত-ঘর নির্মাণের কাজ করে থাকেন মধ্যপাড়া গ্রামের কারিগর শম্ভু মন্ডল। জীবনের ২৫ ধরেই বর্ষা এলে বসত-ঘর ছেড়ে নৌকা তৈরী করেন তিনি। এক সময় ভালো ভালো সব কাঠ দিয়ে নৌকা করা হলেও এখন তিনি নৌকায় তৈরী করছেন মেহগনি, চাম্বল ও কড়ই কাঠে। নৌকা তৈরিতে কাঠ ছাড়াও মাটিয়া তৈল, আলকাতরা, তারকাটা, গজাল, পাতাম ইত্যাদির দরকার হয় বলে জানিয়েছেন শম্ভু মন্ডল। তিনি আরো জানান, দুইজন কারিগর মিলে দিনে দু’টি পর্যন্ত নৌকা তৈরী করতে পারেন। তিনি ৮ হাত থেকে শুরু করে ১২ হাত পর্যন্ত দৈর্ঘ্য নৌকা তৈরি করে থাকেন। বাজারে ৮ হাতের নৌকা গুলো ২ হাজার টাকা, ৯ হাতের নৌকা গুলো ২ হাজার ৬০০ টাকা বিক্রি করি ও ১০ হাতের নৌকা গুলো ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করে থাকেন।
ফজর | ৪:২৬ |
জোহর | ১১:৫৬ |
আসর | ৪:৪১ |
মাগরিব | ৬:০৯ |
ইশা | ৭:২০ |
শিরোনাম