ভারতের মাহাত্মা গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল পীস অ্যাওয়ার্ড পেলেন সিরাজদিখানের কৃতিসন্তান অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোহাম্মাদ আখতার হোসেন। গত ৯ জুন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ কলিকাতা জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি রথীন্দ্র মঞ্চে “ভারত-বাংলাদেশ রবীন্দ্র-নজরুল বঙ্গ উৎসবে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মেজর মোহাম্মাদ আখতার হোসেনকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মাননীয় মন্ত্রী, বিধায়ক, এমএলএ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, সঙ্গীত শিল্পীবৃন্দ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, শিল্প সাহিত্য অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সাংগঠনিক দক্ষতা ও মানবসেবায় বিশেষ ভূমিকা রাখায় ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ কালচারাল কাউন্সিল মেজর মোহাম্মাদ আখতার হোসেনকে (অবঃ) এ সম্মাননা প্রদান করেন। মেজর মোহাম্মাদ আখতার হোসেন সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের কয়রাখোলা গ্রামের মোহাম্মাদ হোসেন আলি মাদবরের পুত্র। তিনি মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক কৃতিত্বের সাথে সম্পন্নের পর ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন্ড অফিসার পদে যোগদান করেন। চাকুরীর সময়কালে তিনি ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড এন্ড ষ্টাফ কলেজসহ গানারী কোর্স এবং অন্যান্য প্রশিক্ষন সমাপ্ত করেন। জাতীসংঘের অধীনে তিনি রিপাবলিক অফ হাইতি এবং রিপাবলিক অফ জর্জিয়ায় ১৯৯৫ ও ২০০২ সালে শান্তিমিশনে সফলভা
বে অংশ নেন। শান্তিরক্ষী মিশনে থাকাকালে তিনি আমেরিকার তদানীন্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আল-গোর এবং তাঁর পরিবারের বিশেষ নিরাপত্তার অভূতপূর্ব কাজের জন্য ইউনাইটেড ন্যাশন্স মিশন ইন হাইতির ফোর্স কমান্ডার জেনারেল জোসেফ কিঞ্জারের কাছ থেকে সম্মাননা হিসাবে বিশেষ ‘লেটার অফ এপ্রিশিয়েশন” লাভ করেন। মেজর মোহাম্মাদ আখতার হোসেন (অবঃ) সম্ভ্রান্ত মুসলিম জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণের সুবাদে সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্য দিয়ে নৈতিক আদর্শে বড় হয়েছেন। শিক্ষাগত ক্ষেত্রে তিনি মাষ্টার্স অফ ডিফেন্স, মাষ্টার্স অফ সায়েন্স, মাষ্টার্স অফ বিজনেজ এডমিনিষ্ট্রেশন সহ ডক্টরেট অফ ফিলোসোপি (পিএইচডি) সম্পন্ন করেন। মেজর মোহাম্মাদ আখতার হোসেন পাঁচ ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে তিনি সর্বকনিষ্ঠ। তাঁর বড় ভাই ডঃ মোহাম্মাদ হাবীবুল্লাহ বর্তমানে আমেরিকার নর্থ ইষ্টার্ন ইউনিভার্সিটির একজন সনামধন্য প্রফেসর এবং অন্যান্য ভাইদের সকলে নিজ নিজ পেশায় সুনামের সাথে কর্মরত ছিলেন যারা ইতিমধ্যে মৃত্যু বরণ করেছেন। মেজর মোহাম্মাদ আখতার হোসেন (অবঃ) এর সহধর্মিনী প্রফেসর মিসেস মিটুল চৌধুরী বর্তমানে মীরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের উপাধাক্ষ্য হিসাবে কর্মরত আছেন। তাঁর দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে ডাঃ আনিকা তাবাসসুম উম্মিকা ডেলটা মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হসপিটালে কর্মরত এবং ছোট মেয়ে সানজিদা তাবাসসুম কনিকা আমেরিকায় ইউনিভার্সিটি অফ ম্যারিল্যান্ড, বাল্টমোর কাউন্টিতে মাইক্রো ফাইন্যান্সে অনার্স করছেন। মোহাম্মাদ আখতার হোসেন (অবঃ) মাহাত্মা গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল পিস অ্যাওয়ার্ড সম্মানে ভূষিত হওয়ায় আত্নীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, স্থানীয় এলাকাবাসীসহ শুভাকাঙ্ক্ষী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন মাধ্যমে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করছেন। মেজর মোহাম্মাদ আখতার হোসেন (অবঃ) বলেন, পুরস্কার পেয়ে আমি আনন্দিত এবং সম্মানিত। স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনালগ্ন থেকেই বন্ধুপ্রতীম ভারতকে আমরা সবসময় পাশে পেয়েছি। আজ এই বিরল সম্মাননায় আমি মুগ্ধ এবং কৃতজ্ঞ। ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ কালচারাল কাউন্সিলের মানবসেবার যে মুখ্য উদ্দেশ্য তা এই সম্মাননার প্রেক্ষিতে আমাকে ভবিষ্যতে আরো উজ্জীবিত এবং অনুপ্রেরনা জোগাবে।
উল্লেখ্য, তিনি মা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, রিভার সাইড সুয়েটার্স লিমিটেড, আন-নূর ফ্যাশন্স লিঃ, এম এ ট্রেডার্স ও ধলেশ্বরী গ্রীনভিলেজ ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।